মাল্টিমিডিয়া ৫০ হাজার ক্লাসরুম ॥ স্কুল কলেজ মাদ্রাসায়ঃ
মাল্টিমিডিয়া ৫০ হাজার ক্লাসরুম ॥ স্কুল কলেজ মাদ্রাসায়ঃ বিভাষ বাড়ৈ ॥
জাতীয় শিৰানীতি ও ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন আর ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে পাল্টে যাচ্ছে শিৰা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণী কৰের ধরন। শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) শিক্ষায় শিক্ষিত করা, শ্রেণী শিক্ষণ আকর্ষণীয় করা এবং শহর ও গ্রামের শিৰার বৈষম্য দূর করার লৰ্য সামনে রেখে নেয়া হয়েছে বিশাল উদ্যোগ। লক্ষ বাস্তবায়নে দেশের ৩১ হাজার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় সরবরাহ করা হচ্ছে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ এ সংক্রান্ত সকল শিক্ষা উপকরণ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী শিক্ষণকে আধুনিক করার উদ্যোগের পর এবার বিদ্যুত আছে এমন ২০ হাজার ৫০০ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম তৈরির প্রকল্পও চূড়ানত্ম। কেবল তাই নয়, বিদু্যতবিহীন ৭ হাজার ৪১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় সোলার প্যানেল তৈরি করে প্রতিষ্ঠা করা হবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী বছরের (২০১২) ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই ৩১ হাজার সরকারী-বেসরকারী শিৰা প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ এ সংক্রান্ত সকল শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করবে সরকার। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিৰা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিৰা অধিদফতর এবং প্রাথমিক ও গণশিৰা মন্ত্রণালয় পুরো প্রক্রিয়া বাসত্মবায়ন করতে হাতে নিয়েছে বেশ কয়েকটি প্রকল্প। ৪৬০ কোটি টাকার এই প্রকল্প বাসত্মবায়িত হবে সরকারের নিজস্ব অথর্ায়নে। সরকারী ও বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার মধ্যে যেগুলোতে বিদু্যত সংযোগ আছে সেগুলোতে আইসিটি শিৰা উপাদান সরবরাহ করা হবে।
অন্যদিকে প্রাথমিক ও গণশিৰা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতি উপজেলায় গড়ে কমপৰে ২০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (যেগুলোতে বিদু্যত সংযোগ আছে) আইসিটি শিৰা উপকরণ সরবরাহ করা হবে। শিৰা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেয়া কাজে সরকারের ব্যয় হবে ৩০৬ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে 'ইনট্রুডাকশন অব আইসিটি এট সেকেন্ডারি এ্যান্ড হায়ার সেকেন্ডারি লেভেল'। সরকারের এ উদ্যোগের মধ্যে আছে শিৰকদের প্রশিৰণও। শিৰা প্রতিষ্ঠানে যারা এই বিষয়ে শিৰার্থীদের বোঝাবেন সেই শিৰকদের জন্য প্রকল্পে আছে প্রশিৰনের ব্যবস্থা। মাধ্যমিকের নবম ও দশম শ্রেণী ও উচ্চ মাধ্যমিক শিৰা সত্মরে বর্তমানে কম্পিউটার শিৰা ঐচ্ছিক (অপশনাল) বিষয় হিসেবে চালু আছে। আইসিটি প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের কমপৰে একজন কম্পিউটার বিষয়ের শিৰককে দেয়া হবে প্রশিৰণ। দেশের ১০ হাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ করা হবে। জানা গেছে, এ বিষয়ে একটি ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রসত্মাবনা) প্রণয়ন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিৰা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাসত্মবায়নাধীন এই প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে 'আইসিটি স্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইন প্রাইমারি স্কুল'। এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৫০ কোটি টাকা। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রাথমিক শিৰা সত্মরের এই প্রকল্প বাসত্মবায়ন করা হবে। আছে মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তথ্য প্রযুক্তি শিৰার সুযোগ। শিশু শিৰাথর্ীদের কাছে পাঠদান আরও আকর্ষণীয় ও প্রযুক্তির প্রতি শিশু শিৰাথর্ীদের আগ্রহ বৃদ্ধিতে দেশের ৫০৩টি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়েও ১টি করে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক ও গণশিৰা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। চলতি বছরেই সবকটি মডেল বিদ্যালয়ে আইসিটি শিৰা উপকরণ পেঁৗছে যাবে বলে আশাবাদী প্রাথমিক শিৰার সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তারা।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিৰা মন্ত্রণালয়ের সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় শিৰা প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সম্প্রসারণের বিকল্প নেই। শিৰাথর্ীদের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সমর্্পকে দৰ করে গড়ে তুলতেই হবে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের সব মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০ হাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া ও অন্যান্য শিৰা উপকরণ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। পযর্ায়ক্রমে বেসরকারী বিদ্যালয়েও এসব উপকরণ সরবরাহ করা হবে।
এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী শিৰণকে আধুনিক করার উদ্যোগই কেবল নয় একই সঙ্গে অত্যাধুনিক হচ্ছে সরকারী বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার শ্রেণী কৰ। বিদু্যত আছে এমন ২০ হাজার ৫০০ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরম্নম তৈরির প্রকল্পও চূড়ানত্ম। কেবল তাই নয়, বিদু্যতবিহীন ৭ হাজার ৪১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় সোলার প্যানেল স্থাপন করে প্রতিষ্ঠা করা হবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরম্নম। ২০ হাজার ৫০০ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরম্নম তৈরির প্রকল্পের জন্য নেয়া হয়েছে ৩২৫ কোটি টাকার প্রকল্প। ইতোমধ্যেই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। বিদু্যতবিহীন ৭ হাজার ৪১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় সোলার প্যানেল স্থাপন, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরম্নম প্রতিষ্ঠায় নেয়া হয়েছে ৬১০ কোটি টাকার প্রকল্প। এই প্রকল্পে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরম্নম তৈরির ব্যয় ছাড়াও প্রতিটি শিৰা প্রতিষ্ঠানে সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৬ লাখ টাকা। সরকারের এই প্রকল্পকে ব্যতিক্রম ও যুগানত্মকারী হিসেবে অভিহিত করেছেন সংশিস্নষ্ট সকলেই। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিৰা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নোমান উর রশীদ বলেছেন, শিৰানীতি ও ভিশন ২০২১ বাসত্মবায়নের আলোকে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির শিৰা সারাদেশে দ্রম্নত সম্প্রসারণ করতে হবে। প্রাথমিক থেকে শিৰার উচ্চতর সত্মর পর্যনত্ম কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি শিৰার ব্যবহার সম্প্রসারণ করতে হবে।
সেই লৰ্যেই সরকারের এই উদ্যোগ। তিনি বলেন, শিৰানীতিতেও যত দ্রম্নত সম্ভব শিৰার্থীদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি শিৰা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, শিৰাথর্ীদের তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) শিৰায় শিৰিত করা, শ্রেণী শিৰণকে আকর্ষণীয় করা এবং শহর ও গ্রামের শিৰার বৈষম্য দূর হবে যুগানত্মকারী এই উদ্যোগের ফলে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে আমাদের পুরো শিৰা ব্যবস্থার ওপর।
প্রাথমিক শিৰা অধিদফতরের মহাপরিচালক শ্যামল কানত্মি ঘোষ জনকণ্ঠকে বললেন, এই উদ্যোগের সুফল সম্পর্কে। তিনি বললেন, সব মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০ হাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া ও অন্যান্য শিৰা উপকরণ বিনামূল্যে সরবরাহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিৰার্থীরা শ্রেণী কৰে একটি বিষয় শোনার সঙ্গে সঙ্গে প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখতে পারবে। এর ফলে শিৰা শিশুদের কাছে যেমন আকর্ষণীয় হবে তেমনি সহজে শিৰা আয়ত্তও করতে পারবে শিশুরা। এদিকে সরকারের এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি করতে পরলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে আরেকধাপ এগিয়ে যাবে দেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে এটি হবে একটি মাইলফলক।
Saturday, November 5, 2011
যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা থেকে খালেদা জিয়ার সরে আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
৪ নভেম্বর ২০১১ | ২০ কার্তিক ১৪১৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিতে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ নির্বাচনই প্রমাণ করে, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে খালেদা জিয়ার অবস্থান জনগণ গ্রহণ করেনি। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার অপচেষ্টা থেকে তার সরে আসা উচিত। নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন সেনাবাহিনী 'ভোট চুরি' করে তার প্রার্থীকে জিতিয়ে দেবে। সেখানে সেনা মোতায়েন না হওয়ায় সংবিধানের লঙ্ঘন কিংবা ব্যত্যয় হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, জাতির জনকের প্রতিকৃতিসহ ১৫ আগস্টের শহীদ ও জাতীয় নেতাদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, পবিত্র ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, মোনাজাত ও আলোচনা সভাসহ দিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করে।
আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই জন প্রার্থীর মধ্যে একজন বিজয়ী ও আরেকজন দ্বিতীয় হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ১ লাখ ৮০ হাজার ও আরেকজন ৭৮ হাজার ভোট পেয়েছেন। অথচ তার (খালেদা জিয়া) প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ৭ হাজার ৭শ' ভোট। ওই নির্বাচনে জনগণের জবাব তিনি পেয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তার প্রার্থীর এ দুরবস্থ্থা হলো কেন? ভোটের এ
অবস্থা দেখে খালেদা জিয়ার চেতনা আসা উচিত। উনি যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য মাঠে নেমেছেন। জনগণ তা গ্রহণ করেনি। এটা দেখে তিনি যেন যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চিন্তা ছেড়ে দেন।
নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে কী এমন ঘটনা ঘটল যে, সেনা মোতায়েন করতে হবে? সেনা মোতায়েনের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকেও হঠাৎ চিঠি দিয়ে দেওয়া হলো। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কমিশন যে বৈঠক করল, সেখানে তো সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিকে ডাকেনি কিংবা আলোচনাও করেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা সরকারপ্রধান সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকেন। সরকারপ্রধানই সিদ্ধান্ত নেবেন সেনাবাহিনী ব্যারাকের বাইরে যাবে কি-না। কোথাও সেনা মোতায়েন করতে হলেও তার অনুমতি নিতে হয়। এমন একটি সময় নারায়ণগঞ্জে সেনা মোতায়েন চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে, যখন তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ব্যস্ত ছিলেন, দেশের বাইরে ছিলেন। এ প্রসঙ্গে টিভি চ্যানেলের বিভিন্ন টক শোসহ বুদ্ধিজীবীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অনেককে টক শোতে দেখি_ কেন সেনা মোতায়েন হলো না তা নিয়ে যেন টিভি ভেঙে ফেলছেন।
নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের মাত্র সাত ঘণ্টা আগে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী মোতায়েন না করায় মাঝরাতে তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। খালেদা জিয়া আশা করেছিলেন, সেনাবাহিনী এসে 'ভোট চুরি' করে তার প্রার্থীকে জিতিয়ে দেবে। সেনাবাহিনীর দায়িত্ব কি ভোট চুরি করা? তিনি কেন সেনাবাহিনীকে ভোট চুরির কাজে ব্যবহার করতে চান? তিনি বলেন, ভোট চুরি করে ক্ষমতায় বসাবেন_ এ আশায় খালেদা জিয়া এর আগেও ক্ষমতায় থাকতে ৯ জনকে ডিঙিয়ে জেনারেল মইনকে সেনাপ্রধান করলেন। ইয়াজউদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ও ফখরুদ্দীনকে প্রধান উপদেষ্টা করা হলো। তারা তো তাকে ক্ষমতায় আনতে পারেননি। এগুলো করেও উনার শেষ রক্ষা হলো না। আজ আবার কোন আশায় তিনি সেনাবাহিনীর কথা বলছেন?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন পরিচালনায় সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের নির্বাহী সহযোগিতা দিয়েছে। পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য দেওয়া হয়েছে। সংবিধানেই বলা হয়েছে_ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনায় যা যা সহযোগিতা প্রয়োজন, সরকার নির্বাচন কমিশনকে সেটাই দেবে। সরকার সে অনুযায়ীই কাজ করেছে। কাজেই সেখানে সেনা মোতায়েন না করায় সংবিধানের ব্যত্যয় ঘটেনি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ২০০৩ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকাকালে এমএ সাঈদ নিজেই সরাসরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সেনা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তখন সেনা মোতায়েন করা হয়নি। সেটা কি তারা ভুলে গেছেন? আজ যারা সংবিধান লঙ্ঘনের কথা বলছেন, তখন তো কেউ এ কথা বলে চিৎকার করেননি।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষা করতে চেয়েও পারেননি। যুদ্ধাপরাধী ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারীদেরও তিনি রক্ষা করতে পারবেন না। বাংলার মাটিতে এদের বিচার হবেই।
বিরোধী দলের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের রক্তের পিপাসা এখনও মেটেনি। পিপাসা মিটাতে তারা একের পর এক মানুষ হত্যা ও খুনখারাবি চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের শান্তি ও গণতন্ত্রের জন্য এসব অন্যায়ের বিচার করতেই হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনীর ওপর ভর করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সবার আগে সেনাবাহিনীর ওপর আঘাত হেনেছেন। দেশকে খুনিদের রাজত্বে পরিণত করেছেন। আর জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে দেশকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের দেশে পরিণত করেছেন। জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির হাতে রক্তেভেজা পতাকা তুলে দিয়েছেন।
সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সঙ্গিনের খোঁচায় পবিত্র সংবিধান অপবিত্র করা হয়েছে। আমরা সেই সংবিধান সংশোধন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জনগণের ক্ষমতায়ন ফিরিয়ে এনেছি। ভবিষ্যতে কেউ যেন জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, তার রক্ষাকবচও সংবিধানে যুক্ত করেছি।
দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লুটেরা-জঙ্গিবাদের মদদদাতা, যুদ্ধাপরাধীরা আর যেন জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, তার জন্য জনগণকেই সজাগ থাকতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে যার যার ভোটের অধিকার রক্ষা করতে হবে। সরকার-প্রতিশ্রুত ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত আধুনিক, সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার অঙ্গীকার পূরণেও জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডিমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এবং আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক নূহ-উল-আলম লেনিন ও উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।
No comments:
Post a Comment